আল্লাহর দেয়া বিভিন্ন প্রকার নিয়ামত

আল্লাহর দেয়া বিভিন্ন প্রকার নিয়ামত

আল্লাহ আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকার নিয়ামত ও অনুগ্রহ দান করেছেন। এক প্রকার নিয়ামত হচ্ছে অনুপ্রেরণামূলক নিয়ামত, মোটিভেশন বা প্রেষণার নিয়ামত। অর্থাৎ আমাদের ভিতরের বিভিন্ন চাহিদা ও তাড়না যা আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য শক্তি ও সাহস জুগিয়ে থাকে।

আমরা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন রকম প্রেষণা দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকি। যেমনঃ আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণা, শরীরবৃত্তীয়, মনস্তাত্ত্বিক, শাস্তি ও পুরস্কার, আমলনামা বা বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, প্রতিযোগিতামূলক, বস্তুগত, আগ্রাসী, সহযোগী অনুপ্রেরণা।

আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণাঃ এটা মানবসত্তার অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট। এটাই মানুষকে তাঁর সৃষ্টিকর্তা নিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে, তাঁর ও এই জগতের উদ্দেশ্য-গন্তব্য নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।

শরীরবৃত্তীয় অনুপ্রেরণাঃ দৈহিক তাড়না, যেমন ক্ষুধা-পিপাসা, ঠাণ্ডা-গরম ইত্যাদি অনুভব মানুষকে যথাযত কার্য করতে বাধ্য করে। নিজের ভারসাম্য ধরে রাখে।

মনস্তাত্ত্বিক অনুপ্রেরণাঃ একজন মানুষ সাড়া মাস কাজ করে কারণ তাঁর মনের মধ্যে এই তাড়না আছে যে, কাজ করলে মাস শেষে তিনি নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পাবেন।

শাস্তি ও পুরস্কারঃ ইসলামের একটি মৌলিক বিষয়, সমস্ত আমলের উপর ইসলামের পক্ষ থেকে হয়ত পুরস্কার না হয় শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণাগুলো নগদ ঘটে না, বরং এগুলো হচ্ছে ‘বিলম্বিত পুরস্কার’ বা ‘বিলম্বিত শাস্তি’ এই দিকে খেয়াল করে একজন মুসলমান দুনিয়ার নগদ কোন পুরস্কার বা শাস্তিকে উপেক্ষা করতে সক্ষম হয়

আমলনামা বা বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমঃ মানুষকে আরো বেশী উদ্বুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ তায়ালা এই ব্যবস্থা করেছেন এবং তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সেটা জানিয়েও দিয়েছেন, অর্থাৎ আমাদের সকলের সমস্ত আমল সংরক্ষিত হচ্ছে। এই কথা তিনি আমাদেরকে জানিয়ে দিয়ে আমাদেরকে আরও বেশী আমলের ব্যাপারে যত্নবান হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

প্রতিযোগিতামূলক অনুপ্রেরণাঃ মানুষের মনে প্রতিযোগিতামূলক প্রেরণা সৃষ্টি করেছেন এবং তাদেরকে চূড়ান্ত পর্যায়ে আখেরাতের আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন

বস্তুগত অনুপ্রেরণাঃ মানুষ তাঁর আশেপাশের বস্তুগত সামগ্রী অর্জনের ইচ্ছা পোষণ করে। নিজেকে দারিদ্র-অভাব থেকে মুক্ত রাখতে চায়, নিজের নিরাপত্তা অর্জন করতে চাই। এটা দুনিয়ার ব্যাপারে যেমন ঠিক তেমনি আখেরাতের ব্যাপারেও সমানভাবে প্রযোজ্য

আগ্রাসী অনুপ্রেরণাঃ মানুষ ক্ষেত্র বিশেষ নিজের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে আগ্রাসী ভমিকা পালন করে থাকে। এই প্রেরণা মানুষকে অন্যায় পথে যেমন নিয়ে যেতে পারে ঠিক তেমনি তাঁকে ন্যায়ের পথে সংগ্রাম করতেও সাহস যুগিয়ে থাকে

সহযোগী অনুপ্রেরণাঃ অপরের সাথে মানসিক বন্ধনের অনুমুতি এবং নিজেকে কোন একটি পরিবারের একজন মনে করার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরণের প্রেরণার সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমি মুসলিম উম্মার একজন, আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারীদের একজন এই জাতীয় অনুভূতি মানুষের মধ্যে এক ধরণের সস্তি ও দায়িত্ব বোধ জাগিয়ে তোলে

এসব হচ্ছে মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা, তাড়না। ইসলাম এগুলোকে অস্বীকার করেনি, তবে সেই চাহিদাগুলো নির্দিষ্ট পথ ও পন্থায় অর্জন করার আদেশ দিয়েছে। এটাই হালাল-হারাম। এটাই শরীয়ত। [সাইকোলজিঃ ইসলামী দৃষ্টিকোণ]

Leave a comment